বিজ্ঞানের অগ্রগতি ও পরিবেশ সংরক্ষন
PDF DOWNLOAD LINK
বিজ্ঞান আমাদের প্রতিদিনের জীবনে অগণিত সুবিধা নিয়ে এসেছে। কৃষি, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, পরিবহন, এবং শিল্প ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের অবদান অসামান্য।
উদাহরণস্বরূপ : -
কৃষিক্ষেত্রে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারে ফসল উৎপাদন বেড়েছে।
স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে নতুন ওষুধ ও চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কারের মাধ্যমে অনেক রোগ নিরাময় করা সম্ভব হয়েছে।
যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোন আমাদের জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে।
মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে টিভি।
চাঁদের মাটিতেও পা রাখা সম্ভব হয়েছে বিজ্ঞানের দৌলতে।
এইসব অগ্রগতি আমাদের জীবনকে সহজ ও গতিশীল করেছে। বিজ্ঞানের দৌলতে সমগ্র দুনিয়াটা মানবজগতের হাতের মুঠোয় এসে গিয়েছে। কেবল বিজ্ঞানই নয় তার সাথে সাথে প্রযুক্তিবিদ্যা ও নিজেকে বিস্তারিত করেছে। তবে বিজ্ঞানের এই অগ্রগতি অনেক সময় পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
উদাহরণস্বরূপ : -
শিল্প বিপ্লবের সময় থেকে কারখানা ও যানবাহনের ধোঁয়া এবং প্লাস্টিক ও অন্যান্য বর্জ্য পদার্থের ফলে বায়ু, জল ও মাটি দূষিত হচ্ছে। ফলে পরিবেশ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
প্লাস্টিক ও অন্যান্য অ-বায়োডিগ্রেডেবল পদার্থের ব্যবহার পরিবেশে দীর্ঘমেয়াদী দূষণ সৃষ্টি করেছে।
বনভূমি উজাড়, জলবায়ু পরিবর্তন, বায়ু ও জল দূষণ ইত্যাদি সমস্যাগুলি বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে বেড়েছে।
জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার এবং গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের ফলে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন ঘটছে।
পরিবেশদূষণের ফলে আমাদের ঋতুবৈচিত্র্য নষ্ট হয়ে গেছে এর সাথে সাথে চলছে বৃক্ষ নিধন। বন কেটে সাফ করে দেওয়া হচ্ছে। সঠিক সময়ে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না-হওয়া, অত্যধিক গরম, টাইফুন ও সাইক্লোনের মতাে প্রাকৃতিক দুর্যোগের একমাত্র কারণ এই পরিবেশদূষণ। এভাবে চলতে থাকলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন প্রায় ২০ - ৩০ বছরের মধ্যে পৃথিবীজুড়ে দূষণজনিত মড়ক দেখা দেবে। এই মড়ক ও দুর্যোগ থেকে বাঁচতে হলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে আমাদের পরিবেশকে সংরক্ষণ করতে হবে ।
উদাহরন -
সৌর শক্তি, বায়ু শক্তি এবং জলবিদ্যুৎ ব্যবহার করে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমানো যায়।
বৈদ্যুতিক গাড়ি, শক্তি সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি ও রিসাইক্লিং প্রযুক্তি পরিবেশ দূষণ কমাতে সাহায্য করে।
বিভিন্ন কারখানায় দূষণ নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তি ব্যবহার করে বায়ু ও জল দূষণ কমানো সম্ভব।
বর্জ্য পুনর্ব্যবহার ও পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ প্রযুক্তির উন্নয়নের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ কমানো যায়।
বিজ্ঞানের অগ্রগতি ও পরিবেশ সংরক্ষণ একে অপরের পরিপূরক। সঠিক নীতি ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়ন পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব কমিয়ে আমাদের জীবনে আরও সুখ-সমৃদ্ধি নিয়ে আসতে পারে। এজন্য আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং পরিবেশ সংরক্ষণে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। একমাত্র তবেই আমরা নিজেদের জন্য ও পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি সুস্থ ও সবুজ পৃথিবী গড়ে তুলতে সক্ষম হবো।
0 Comments