বাংলার উৎসব
ভুমিকা – মানবজীবনের একটি অপরিহার্য অঙ্গ হল উৎসব। সে অনেকের সাথে নিজেকে মিলিয়ে দিতে চায়, প্রতিদিনের একঘেয়েমি জীবন থেকে সে মুক্তি পেতে চায়। আর সেজন্যই মানুষ উৎসবে মেতে ওঠে। উৎসব মানুষকে আনন্দ দেয়। বাঙালি জীবনে সারাবছর ধরে অজস্র উৎসব লেগে থাকে। বাংলার এই উৎসব গুলিকে চার শ্রেনিতে ভাগ করা যায় – (১) ধর্মীয় উৎসব, (২)সামাজিক – পারিবারিক উৎসব, (৩) ঋতু উৎসব, (৪) জাতীয় উৎসব।
ধর্মীয় উৎসব- এই বাংলায় বিভিন্ন ধরনের মানুষ বসবাস করেন। সকল সম্প্রদায়ই আপন আপন ধর্মীয় উৎসবে মেতে ওঠে। হিন্দুদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপুজো। শরৎকালে দেবী দুর্গার আরাধনাকে কেন্দ্র করে কয়েকদিনের জন্য ধর্মমত নির্বিশেষে বাঙালির জীবন আনন্দমুখর হয়ে ওঠে। দুর্গাপুজো ছাড়া কালীপুজো , সরস্বতীপুজো, লক্ষীপুজো, বিশ্বকর্মা পুজো , মনসা পুজো প্রভৃতিও বাংলার বিশিষ্ট ধর্মীয় উৎসব। এছাড়াও মহরম, ইদ , সবেবরাত ইত্যাদি মুসলমান সম্প্রদায়ের উৎসবও বাঙালির জীবনের সঙ্গে অচ্ছেদ্যভাবে জড়িত।
সামাজিক -পারিবারিক উৎসব – মানুষ সামাজিক জীব। বাঙালি সমাজে নানারকম সামাজিক উৎসব পালিত হয়ে থাকে । এই সামাজিক উৎসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল – বিবাহ , অন্নপ্রাশন , জন্মদিন , প্রভৃতি এছাড়া আরও কিছু অনুষ্ঠান আছে যেগুলি মুলত পারিবারিক যেমন – জামাইষষ্ঠী, ভাতৃদ্বিতীয়া ইত্যাদি। এইসব উৎসবের মধ্যে দিয়ে আত্মীয়স্বজন , বন্ধুবান্ধব দের সঙ্গেও একটা নিবিড় সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
ঋতু উৎসব - বাংলায় বিভিন্ন ঋতুতে অনুষ্ঠিত হয় বর্ণময় উৎসব। বাংলার এই ঋতু উৎসবের মধ্যে প্রধান হল – নবান্ন , পৌষপার্বণ , দোলযাত্রা , নববর্ষ ইত্যাদি ।
জাতীয় উৎসব – শুধু ধর্মীয় সামজিক – পারিবারিক কিংবা ঋতু উৎসব নয়, স্বাধীনতা দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবস, রবীন্দ্রজয়ন্তী , নজরুলজয়ন্তী ইত্যাদি পালন উপলক্ষ্যে বাঙালি উতসবে মেতে ওঠে।
উপসংহার – বাঙালি উৎসবপ্রিয় জাতি। বাঙালি সমাজে বারো মাসে তেরো পার্বণ। এইসব উৎসব আছে বলেই সমস্যাজটিল জিবনেও বেচে থাকার আশ্বাস পাওয়া যায়, এই সমস্ত উৎসবের মধ্যেই রয়ে যায় বাঙালির প্রানের পরিচয়।
0 Comments